হটাৎ ই আবিরের ঘুম ভেঙে যায়, মেয়েটির অস্ফুট গোঙানির শব্দে। তাকিয়ে দেখে অচেতন অবস্থাতে মেয়ে টা কাতরাচ্ছে। আবির তাড়াতাড়ি করে বাটিতে পানি এনে মেয়েটার মাথায় জলপট্টি দিতে থাকে।
__ জ্বর কিছুটা কমেছে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে আবির। কি হতে কি হয়ে গেলো, দুই দিন আগেও যে ছিলো সব চেয়ে চরিত্রবান ছেলে সে আজ রেপিস্ট।
__ ভাবতে ভাবতে কান্না আসছে তার, কে এই তৃণা? কে এই মেয়েটি? দুজনের চেহেরার মিল কিভাবে? দুজনে কি জমজ বোন। নাহ আর কিছু ভাবতে পারছে না। উফফ আল্লাহ! একিসের শাস্তি দিচ্ছো তুমি।
__ মেয়েটির জ্ঞান ফিরছে না দেখে বেষ্ট ফ্রেন্ড মিশি কে কল দেয় আবির। রিসিভ করেই
__ ” কিরে কি খবর, আজকাল তোর তো কোন খবর ই নাই, তা কেমন আছিস বল।” একদমে কথা গুলো বলে মিশি।
__ একটা প্রব্লেম হয়ে গেছে, বাসায় আসতে পারবি? ইমার্জেন্সি, প্লিজ আই না। ( আবির)
__ ” হুম, পারবো, এখন তো রাত হয়ে এসেছে, এখুনি বাসায় চলে যেতাম। ওকে আসছি ” বলে মিশি।
__মিশি আবিরের এক মাত্র মেয়ে বান্ধবী, সদ্য পাশ করা গাইনী ডাঃ। আবির কেনো জানি এই মেয়েটাকে নিঃসন্দেহে সব কথা বলে দিতে পারে। মিশির সাথে সেই ক্লাস নাইন থেকে একসাথে পড়েছে আবির। দুজনেই একসাথে MBBS পাশ করে মিশি গাইনী তে FCPS করে, বিসিএস দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী ডাঃ হিসেবে নিয়োগ পায় আর পারসোনাল চেম্বার আছে তার। আর আবির এনাটমি নিয়ে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন করে মেডিকেল ভার্সিটি এর প্রফেসর হয় একই সাথে বিসিএস এ টিকে আউটডোরে বসে। পারসোনাল চেম্বার এখনো দেয়নি আবির। বড়লোক বাবার একমাত্র সন্তান আবির তাই তার এতো মাথা ব্যথা ছিলো না কখনোই।
__ কলিংবেল বেজে ওঠায় আবিরের ধ্যান ভাঙে। দৌড়ে নিচে গিয়ে দেখে মিশি, মিশির পায়ের কাছে বসে পড়ে আবির ” দোস্ত আমি পাপী, আমার জন্য একজনের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে, সে কেমন আছে প্লিজ দেখ” কান্নায় ভেঙে পড়ে আবির।
__ কি হয়েছে বলবি তো? এমন করছিস কেন তুই?
__ ঘরে চল, দরজা লাগিয়ে উপরে নিয়ে যায় মিশি কে। মিশি মেয়েটিকে দেখে আবির কে জিজ্ঞেস করে ” কে ও? “। আবির মাথা নামিয়ে বলে ” জানিনা কে মেয়েটি, আমি ওর সাথে চরম অন্যায় করেছি। এরপর থেকেই সে অজ্ঞান, এখনো জ্ঞান ফিরে আসেনি। তুই প্লিজ দেখ। ”
__ তুই কি করেছিস ওর সাথে সেটা বল (মিশি)।
__ রেপ ( কান্নার স্বরে আবির)
__ তুই এতো নিচে নেমে গেলি কখন আবির বলতো। লজ্জা করলো না তোর তাও এখন বিপদে পড়ে আমায় ডেকেছিস। (মিশি)
__ তোকে সব খুলে বলবো, প্লিজ আমায় ভুল বুঝিস না। আগে ওকে বাঁচা প্লিজ। ( আবির)
__ তুইই আমার সামনে থেকে এখন যা, ঘৃণা আসছে তোর প্রতি আমার। (মিশি)
__ মিশি দেখে প্রচুর ব্লাড গেছে মেয়েটির, জ্বর এসেছে বলে আবির কম্বল দিয়ে রেখেছিলো আর খেয়াল করেনি।
__ মিশি তাড়াতাড়ি মেয়েটির হাতে I/V চ্যানেল ওপেন করে আবিরের ঘরে থাকা স্যালাইন সেট করে দেয়। ব্লাড বন্ধ করার ব্যবস্থা করে। জ্বরের ওষুধ দিয়ে দেয় স্যালাইন এর মাধ্যমেই। বেরিয়ে আসে আবিরের রুম থেকে।
__ আবির এর কাছে পরে মিশি সব শুনে বলে ” তুই রাগী ছিলি জানতাম কিন্তু তাই বলে এতোটা নিচে নেমে যাবি জানা ছিলো না।” বলেই আবিরের বাসা থেকে বের হয়ে যায় মিশি।
চলবে……..