প্রিয়তা ধীরে ধীরে চোখ খোলার চেষ্টা করলো। নিজের উপস্থিতি টের পেলো বিছানায়। মাথার ওপর সিলিঙ ফ্যানটা ধীরে ধীরে ঘুরছে। জানালা খোলা থাকায় দক্ষিণা হাওয়া সেই সাথে ঘরে ঢুকছে সমানতালে। প্রিয়তা আরও একবার মনে করার প্রয়াস চালালো হয়েছিলো কি। মনে পড়া মাত্রই সে হুড়মুড়িয়ে উঠে বসলো। সে তো ছিলো অভীর সাথে, তারপর এমন কি হলো যে সে ক্যাম্পাস থেকে ডিরেক্ট নিজের রুমে এসে পড়লো?
মাথাটা প্রিয়তার বোলতার মতো ভনভন করছে। কপাল ব্যান্ডেজ করা। হয়তো রক্তে একাকার হয়ে গিয়েছিলো। প্রিয়তা নিজেকেই মনে মনে অপমান করলো। ওমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্ঞান না হারালে কি হতো না? বিধাতা বারবার কেন এমন অবমাননা করছে তার ওপর?
খপ করে খুলে গেলো দরজা। প্রবেশ করলো সায়রা বানু। মুখ থমথমে আকার ধারন করেছে তার। চোখে – কপালে অল্পবিস্তর ভাঁজ। প্রিয়তা ঢোক গিললো। মায়ের মতিগতি মোটেও সুবিধার না। সায়রা বানু এগিয়ে দিলো শরবতের গ্লাস। বললো,
‘ এক চুমুকে শেষ করবি।’
প্রিয়তা নাকোচ করার সাহস পেলো না। ভয়ে ভয়ে গ্লাস নিয়ে সত্যি সত্যিই সবটুকু শরবত খেয়ে ফেললো। সায়রা বানু কথা বললেন না আর। চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই প্রিয়তা ডাক দিয়ে বললো,
‘ আম্মু!’
মহিলা পেছনে ঘুরলো। প্রিয়তা আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলো,
‘ আমি…আমি কিভাবে এসেছি এখানে?’
‘ কিভাবে আর আসবি? তুই তো আর ডানা কাটা পরী না যে উড়ে উড়ে আসবি?……অভী নিয়ে এসেছে।’
অপমানে কালো হয়ে গেলো প্রিয়তার মুখ। মা যে ইচ্ছে করেই কথাটা খোঁচা মেরে বলেছে সেটা বুঝতে আর বাকি রইলো না। অল্পসময়ের মধ্যেই রুমে এসে পড়লো অরিন,তুশি আর রুশি। অরিনের কোলে তুশি আর রুশি ওর হাত পেঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাচ্চা দুটো মেয়ের পুরো মুখই চকলেট দিয়ে মেখেসেখে একাকার। অরিন বলে উঠলো,
‘ কি রে আপা তোমার তাইলে জ্ঞান ফিরেছে? আজ তো ভেবেছিলাম এমনিতেই খাটে চিৎপটাং হয়ে থাকবে।’
প্রিয়তা কথা বললো না। অরিন খাটে বসলো। তুশি রুশি কোলে চড়ে বসলো প্রিয়তার। চকলেটে মাখা মুখ দিয়ে প্রিয়তার সারামুখে চু’মু দিয়ে বললো,
‘ ভালো লাগছে আপু?’
‘ হুম ভালো লাগছে।’
আনমনে ব্যার্থ যোদ্ধার মতো কথাটি আওড়ালো প্রিয়তা। সায়রা বানু আচমকা বসে পড়লো প্রিয়তার কাছে। চোখে মুখের ক্ষোভ স্পষ্ট জানান দিচ্ছে আজ প্রিয়তার একটা হেস্তনেস্ত সে করেই ছাড়বে। বললো,
‘ তুই কি জীবনেও বড় হবি না প্রিয়তা?’
প্রিয়তা হতবুদ্ধিকর পরিস্থিতিতে পড়লো। প্রশ্নটা যে কেন করেছে সেটা তার অজানা না। সায়রা বানু এই মেয়েটাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার চরম শিখরে আছে।মেয়ের বোকা সোকা কর্মের জন্য প্রতি রাতেই তার রক্তচাপ ভয়াবহ ভাবে বেড়ে যায়। হতাশায় হাসফাস করে সে বললো,
‘ তোরে নিয়ে যে কি করবো ভেবে পাচ্ছি না রে। অভী তোকে এমন কি বলেছিলো যে রাস্তায় পড়ে মাথা ফাটিয়ে ফেললি? তোরে কি তোর বাপ-চাচা দুধ ডিম কম খাওয়ায়? ছেলেটা আজ সারা দুপুর তোর জন্য সব কাজ ফেলে ঘুরেছে। বাপ-মার জন্য তোর বিন্দুমাত্র মায়া নেই, তা তো জানি- তাই বলে ওই ছেলেটার ওপর তো একটু রহম কর! আজীবন শুনি মেয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে বর-শ্বাশুড়ির চাপে আধমরা হয়ে যায়। এখন তো দেখা যাবে তোরে বিয়ে করলে অভীরই সর্বনাশ হয়ে যাবে।’
মায়ের এই অপমানে আরও একবার মুখ কালো হয়ে গেলো। অরিন হাসছে মিটমিটিয়ে। প্রিয়তা ওর এমন হাসি দেখে ভ্রু কুচকে ফেললো। দশম শ্রেণিতে পড়া ছোট বোনের সামনে মায়ের এভাবে ভয়াবহ অপমানে রি রি করে উঠলো মন। সায়রা বানু উঠে পড়লো। বললো,
‘ রুমে থাক এখন। আমি রান্নাঘর থেকে আসছি। ওই বাড়ি থেকে লোক এসেছে।’
কুঁচকানো ভ্রু স্ফীত হয়ে গেলো মায়ের এমন সংলাপ শুনে। চট করে কথাটি যেন স্নায়ু গ্রহন করতে পারলো না। হতবুদ্ধিকর অবস্থায় প্রশ্ন ছুড়লো,
‘ কোন বাড়ি থেকে লোক এসেছে?
সায়রা বানু হতাশার চরম পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হলো। তার এমন কটকটে চাহিনীতে ছোট হয়ে গেলো প্রিয়তা। আর কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পেলো না৷ অরিন আগ বাড়িয়ে বললো,
‘ আরে তুমি কি আসলেই বুঝোনা কিছু আপু? ওই বাড়ি বলতে তোমার হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এসেছে। তোমার দেবর, তোমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি সব।’
‘ তারা কেন আসবে?’
প্রিয়তার এ কথায় সায়রা বানু দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
‘ সাখাওয়াত ভিলাতে একটা গাধি মেয়ে রাস্তায়- রাস্তায় জ্ঞান হারাবে, তাহলে তারা দেখতে আসবে না? তোর জন্য আজ বেচারা অভী কি বকাটাই না খেলো ওর বাবার কাছে। নুরুল ভাই বললেন যে ছেলেটা নাকি তোর খেয়াল রাখতে পারেনি। অথচ আমরাই জানি তুই কত বড় বিচ্ছু মেয়ে হতে পারিস, তবুও ছেলেটা তোর বিরুদ্ধে কোনো টু শব্দও করেনি। ‘
অভীর এত প্রশংসা শুনে মনে মনে বড্ড বেশি হিংসা অনুভব করলো প্রিয়তা। চোখের দৃষ্টি অন্যত্র নিয়ে ওড়না মুচড়ে ধরলো। সায়রা বানু কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন নিচে। রুদ্রিক অদ্রি এতক্ষণ উঁকি ঝুঁকি মারছিলো ঘরে। ছোটআম্মুর যে অবস্থা,ওদের ঘরে আসার সাহস হচ্ছিলো না। সায়রা বানুর সাথে চোখাচোখি হওয়া মাত্রই মিহিয়ে গেলো দুজনে। সে এগিয়ে এলো। থমথমে গলায় বললো,
‘ প্রিয়তার থেকে তোদের দুটাকে বেশি ভয় পাই আমি। খবরদার ওরে কান পড়া দিবি না। যদি শুনি যে অভীর সাথে প্রিয়তার বনিবনা হচ্ছেনা আর এতে তোদের মতো দুই বিচ্ছুর হাত আছে তবে ভুলে যাবো যে তোরা আমার ভাসুরের ছেলেমেয়ে। এত বড় ধেড়ি ছেলেমেয়ে হয়ে তোরা নিশ্চয়ই চাইবি না যে অরিন বা তুশি রুশির সামনে তোরা এমন অবস্থায় পড়্ , তাই না?
শুকনো ঢোক গিললো রুদ্রিক আর অদ্রি। মনে বহাল রইলো ভয়ার্ত অনুভূতি। ছোটআম্মুকে অগোচারে ওরা ‘ খুন্তি আম্মু’ বলে সম্বোধন করে। খুন্তির মতোই উত্যপ্ত সর্বদা তার হৃদয়। অদ্রি মেকি হেসে জড়িয়ে ধরলো সায়রা বানুর ঘর্মাক্ত শরীর। আহ্লাদে বললো,
‘ আহা চিল ছোট আম্মু, তুমি টেনশন নিও না। প্রিয়তা ওই খাটাস (জিভ কেটে) আই মিন অভী ভাইয়াকেই বিয়ে করবে। প্রিয়তা না করলে ওর বাপ বিয়ে করবে, ওর বাপ বিয়ে না করলে চৌদ্দগুষ্টি সব ওই অভীকে বিয়ে করবে। তারপর যদি কেউ না করে, তবে আমি তো আছিই। তাই না?’
সায়রা বানু অদ্রির কান চেপে ধরতেই অদ্রি উহ আহ করে গোঙাতে লাগলো। সায়রা বানু বললো,
‘ তবে রে! এত যদি মনে তোর বিয়ের শখ জাগে বাপরে গিয়ে বল!’
‘ মজা করছিলাম ছোট আম্মু, প্রমিস আর করবোনা। আমি অভী ভাইয়ার দিকে ভুলেও তাকাবো না। তার বংশের পূর্বপুরুষ এমনকি ছোট ছোট আন্ডাবাচ্চাদের দিকেও তাকাবো না। ‘
সায়রা বানু অদ্রিকে এবার ছেড়ে দিতেই অদ্রি যেন হাফ ছাড়লো। এদের সবার কর্মকান্ড যেন শূন্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলো প্রিয়তাকে। রুদ্রিকে বলে উঠলো,
‘ কি দেখছিস?’
‘ এই বাড়িতে আরও বেশিদিন থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো রে!’
রুদ্রিক হাসলো। বললো,
‘ তুই আর কথা বলিস না। একটু আগে তো সিনেমা হয়ে গিয়েছিলো, তোর শ্বশুরআব্বা, শ্বাশুড়ি, তোর দেবর ‘বউমণি’ ‘বউমণি’ বলে কান ফাটিয়ে ফেলেছিলো৷ তোর ওই সেভেনে পড়া বিচ্ছু দেবর আমার সামনে এমন পার্ট নেয় যেন দুনিয়াতে তারই একটা ব্রিলিয়ান্ট ভাই অভী আছে। আর আমরা তো বাতাসে বাতাসে ভার্সিটির সেমিস্টার পার করে আসছি। শালারে জুতাইতে…’
অদ্রি চিমটি মারতেই রুদ্র থামলো। অদ্রি দ্বিগুণ তেজে বললো,
‘ মুখে তো একটু ক্লুপ আটকা ভাই? অরিনরে এই বয়সেই তোর মতো পাকিয়ে ফেলার ইচ্ছে না থাকলে মুখ থামা।’
অগত্যাই সে চুপ করে রইলো। মিনমিনিয়ে প্রিয়তাকে বললো,
‘ আপাতত তোর ভদ্র শালীন দেবর, আর হবু শ্বশুর শ্বাশুড়ি এই বাড়ি থেকে চলিয়া গিয়াছে। তোর খাটাশ হবু বর আই মিন অভী ভাইয়া বড় বারান্দায় বসে আছে৷ এখন তোর আব্বাজান তোকে বলিয়াছে তার সহিত দেখা করিয়া আসতে। দয়া করিয়া সেখানে যান।’
বলেই চলে গেলো রুদ্র। যাওয়ার আগে অদ্রিকে দেখে নিলো কটাক্ষ চোখে। প্রিয়তা সিটিয়ে গেলো। অভী তাহলে এখানেই আছে? এখনও যায়নি?
দুরুদুরু বুক নিয়ে রুম থেকে বেরোলো প্রিয়তা৷ পড়ন্ত বিকেলের অন্তিম সময়। সন্ধ্যা নেমে আসছে। সেই সাথে চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়ছে অস্থিরতা। প্রিয়তা ওড়না ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে বড় বারান্দার সন্নিকটে এগোলো। দেখামাত্রই হৃদকম্পন বেড়ে গেলো। অভী নির্বিকারে বসে আছে বারান্দার চেয়ারে। সামনে প্রিয়তার বড় চাচা। প্রিয়তা আসামাত্রই চাচা তাকালো তার দিকে। ভরাট কন্ঠে বললো,
‘ শরীর কেমন তোর এখন? ‘
‘ ভালো।’
‘ মাথা ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। কোনো সমস্যা হলে আমায় বলবি। খবরদার ওই রুদ্র গাধাটাকে কিছু বলবি না। ওর মতো অপদার্থ ছেলের কাছে কোনো কাজ আশা করাই বেকার।’
প্রিয়তা মনে মনে অসন্তুষ্ট হলো। একজন বাইরের ছেলের কাছে নিজের ভাইয়ের এমন অপমান ওর নিজেরও ভালোলাগলো না। তবুও মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো সে। চাচা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। অভীকে দেখিয়ে বললেন,
‘ তোর জন্যই ছেলেটা বসে ছিলো এতক্ষণ। কথা বল। আমি ওযু করবো।’
বড় আব্বু চলে যাওয়া মাত্রই অস্বস্তি প্রিয়তাকে জেঁকে ধরলো। কেননা অভী তাকে দেখে চলছে। সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে বহুক্ষণ ধরে। চোখে অল্পবিস্তর ভাঁজ। পুরু ঠোঁটে অদ্ভুত এক ধরনের টান। অভী জিজ্ঞেস করলো,
‘ মাথা ব্যাথা করছে না?’
‘ একটু করছে।
‘ করাটাই স্বাভাবিক। যেইভাবে মাথা ফাটিয়েছো আমি তো ভেবেছিলাম বিয়ের আগেই আমায় বিধবা বানিয়ে ফেলবে?’
‘ ছেলেরা বিধবা হয় নাকি?’
‘ সরি প্রিয়তা, বিধবার মেইল ভার্সন আমি জানিনা৷ তবে আমার ধারনা বিধবার মেইল ভার্সন বাংলা অভিধানে নেই। এই যে বিধবা হলে বিধব নেই কেন, রূপসী হলে রূপস নেই কেন? বাংলায় এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলোর মেইল ভার্সন থাকা উচিত কিন্তু নেই। ‘
প্রিয়তা মুখ ফুলিয়ে বললো,
‘ আপনার কাছে বাংলা ক্লাস করতে আসিনি মিস্টার!
অভী হাসলো। ডানপিটে গড়নের শরীরে রম্যাত্নক সেই হাসি। রেলিংয়ে হেলান দিয়ে প্রিয়তার দিকে তাকালো সে। বলে উঠলো,
‘ আমার কাছে কি তাহলে প্রেম করতে এসেছো?’
প্রিয়তা চমকালো। তটস্থ চোখে তাকালো অভীর দিকে। ওড়না আতঙ্কে চেপে ধরে হাসফাস করতে লাগলো।
‘ আমায় বিয়েও করতে চাও না, আবার প্রেমও করতে চাও, ইন্টারেস্টিং!’
‘ মোটেও এমন কিছু চাই না আমি।”
‘ তো কি চাও তুমি?’
প্রিয়তা নিভে গেলো। এতদিনের সাজানো গোছানো কথা চট করে বলে ফেলতে ইচ্ছে হলো। অভী এবার সিরিয়াস কন্ঠে বললো,
‘ তিনরাত সময় দিবো তোমায়। ভাবো, খুব ভালোমতো ভাবো। তুমি যদি সত্যি সত্যিই আমায় বিয়ে না করতে চাও আজ থেকে ঠিক তিনদিন পর এসময় প্রীতিলতা হলের সামনে দাঁড়াবে। তবে এই তিনদিন নরমাল থাকবে। কোনো ঝামেলা করবে না৷ তুমি যদি তোমার সিদ্ধান্তে অটল থাকো তাহলে আমি নিজে বাবাকে না বলবো। ‘
অবাক করে উঠলো প্রিয়তার চোখমুখ। অভীর দৃষ্টিতে তা এড়ালো না।বাঁকা হেসে তাই বললো,
‘ কি মুড সুইং হচ্ছে? আমায় বিয়ে করার ইচ্ছে আছে নাকি এখন?’
‘ মোটেও না।’
চট করে বলে উঠলো প্রিয়তা। অভী কিছু বললো না আর। উদ্যত হলো এবাড়ি প্রস্থান করার জন্য। বলে উঠলো,
‘ দেখা যাক!’
প্রিয়তা খুশিমনে অভীর পিছুপিছু যেতে নিবে ওমনেই পা থামালো অভী। প্রিয়তা অভীর পিঠ বরাবর ধাক্কা খেলো।অভী হঠাৎ প্রিয়তার চোখ মুখ দেখে অদ্ভুত একটা হাসি দিলো। অন্যরকম সে হাসি। প্রিয়তা সচকিত হলো। বলে উঠলো,
‘ কি হয়েছে আপনার?’
অভী নিঃশ্বাস ফেললো। পাঞ্জাবির পকেট থেকে টিস্যু বের করে বিনা অনুমতিতেই মুছে দিলো প্রিয়তার চকলেটে মাখা মুখ। প্রিয়তা ভীমড়ি খেলো। ভুলে গিয়েছিলো যে তুশি রুশি ওর মুখ চকলেটে মাখামাখি করে ফেলেছিলো। এভাবেই সে এতক্ষণ ছিলো?
এমন চাহিনী দেখে অভীর বুঝতে বাকি রইলো না প্রিয়তার অনুভূতি। বিনা দ্বিধায় অকপটে তাই বলে ফেললো,
‘ সরি প্রিয়তা। তোমার চকলেটে মাখা মুখ দেখে একটা ভয়াবহ অনুভূতি অন্তরে জেগে উঠেছিলো। রুদ্র অদ্রির প্রবৃত্তির মতো ভয়াবহ ধরনের সেই অনুভূতি৷ আমি চাই না সেটা প্রশ্রয় পাক। এত বছরে যত্নে গড়া আমার বেপোয়রা বৈশিষ্ট্যটা তোমার জন্য নড়বড়ে হয়ে উঠুক তা চাইনা আমি৷ তাই সেটা মুছে দিলাম।’
বলেই চলে গেলো অভী। মেঝেতে অল্পবিস্তর কাঁপুনি ধরলো। প্রিয়তা দাঁড়িয়ে রইলো থমথমে অবস্থায়। অভীকে প্রেম মানব মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে তাকে ডায়েরীর পাতায় থাকা সুন্দর কিছু অনুভূতির মতো!
.
.
.
.
.
.
#চলবে