প্রিয়কাহন পর্ব ১২

প্রিয়কাহন পর্ব ১২

‘ কিরে মাম্মা! প্রিয়তার রাগ ভাঙানোর জন্য মনে মনে চীনের মানচিত্র বানাচ্ছিস নাকি?’

অন্তুর কথায় ভ্রু কুচকালো অভী। ছেলেটা দিনদিন কেমন যেন লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছে। অথচ কয়েকবছর আগেও এই ছেলের মুখে সহজে কথার খই ফুটত না। প্রেম তো দূরের কথা- কোনো মেয়ের সাথে কথা বললেও হাত পা কাঁপাকাঁপি শুরু করে দিত। আর আজ কি বিবর্তন তার উড়ু উড়ু মনে। সবই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোড়িত ক্যাম্পাসের প্রভাব।

অভী দাঁড়িয়ে আছে বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের উত্তর দক্ষিণ বরাবর সিড়ির সামনে। অদূরেই দৃশ্যমান ছোট ছোট সবুজ টিলা। দেখতে স্নিগ্ধ লাগছে। তবে মন আজ তার মেঘলা আকাশের মতোই বিক্ষিপ্ত। অন্তুর কথায় সেই মাত্রাটা যেন আরও বেড়ে গেলো। কুনাল আর আকিব তাদের দুই বছরের জুনিয়র। অন্তুর কথা শুনে আকিব জিজ্ঞেস করলো,

‘ প্রিয়তা ভাবীর রাগ ভাঙানোর জন্য সত্যিই কি আপনি মনে মনে চীনের মানচিত্র বানাচ্ছেন ভাইজান?’

অভী আরও বিরক্ত হলো একথায়। কুনালও আকিবের মতে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। দুটোই গবেট। অন্তুর মতো চতুর ছেলেপুলেও এগুলোর সাথে থেকে মাথামোটা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। ফিচেল কন্ঠে সে বললো,

‘ এমন কিছুই না।’

এতক্ষণ রাইতা চুপ ছিলো। কোক খেতে ব্যাস্ত ছিলো বলে কথা বলছিলো না। সেটা টুপ করে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে অনির্দেশ করে বললো,

‘ আরে অভী যদি তার আনারকলি কে মনে মনে সরি বলার জন্য রেডিও হয়ে থাকে তোদের কি মনে হয় এটা ও তোদের বলবে? এই আকিব, কুনাল আর বাকিদের যা অবস্থা এক অন্তু বাদে সবক’টাই এই কাহিনি ভবনে ভাইরাল করবে। পরে দেখা যাবে অভী সরিও বললো না কিন্তু কাহিনী যা ঘটার তা তো ঘটেই যাবে।’

অভী মোবাইলের পাওয়ার বাটন অফ করে তিরিক্ষি মেজাজে তাকালো রাইতার দিকে। বললো,

‘ কে বলছে আমি ওকে সরি বলবো? আর আমি ওকে সরি বলতেই বা যাবো কেন?’

অন্তু প্রতিউত্তরে দিলো,

‘ সরি তুই কেন বলবিনা এটা বল! তুই সেদিন যেই ব্যবহার টা করেছিলি এটা কোনো মানুষের কাজ? শালা তুই হাতে পায়ে গুণে সব জায়গায় বড় হলেও একটা মেয়ে মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে লাগে এটা এখনও তুই বুঝলি না। প্রিয়তার চেহারাটা দেখেছিলি? ওই ঘটনার পর ৩-৪ দিন কেটে গেলো মেয়েটা তোর সাথে কথা বলছেনা। তুই দেখছিস তারপর তাকে দেখে ডোন্ট কেয়ার ভাব করে হেঁটে যাচ্ছিস ড্যাং ড্যাং করে। ব্যাপারটা তোর হৃদয়ে লাগে না?’

অভী নিরুত্তর। তার ভাবাবেগ অন্তু বা রাইতার মতো কোনো বন্ধুরই বোঝা সক্ষম হলো না। তন্মধ্যে ওদের আড্ডার মধ্যে এলো আকাশ। হাতে একগাদা কাগজপত্র দেখিয়ে বললো,

‘ চটপট প্রস্তুত হ সবাই! ভিসি থেকে মাত্র পোস্টার নিয়ে আসলাম। এগুলো নিয়ে জুনিয়রদের ক্লাসে চল। খেয়াল রাখবি ৮০% যেন এতে পার্টিসিপ্যান্ট করে। ‘

কথা বলার সুযোগ পেলো না কেউ আর। দ্রুতদমে পোস্টারগুলো নিয়ে কাজে ভাগ হয়ে গেলো।

__________________

‘ শোন! প্রিয়ু, জুনিয়র মেয়েদের সাথে প্রেম কইরা অনেক প্যারা। বিগত তিনবছরে এতগুলো অভিজ্ঞতা নিয়া এটা ভালোমতোই বুঝছি। এবার খুব ভালোমতো চিন্তা কইরা দেখলাম বিয়ে করলে সিনিয়র কোনো আপুরে ধরবো। এটা একটু আধটু বকবো তবে ওই বকার মধ্যেও প্রেম প্রেম ভাব আছে।’

রুদ্রের এ যুক্তিতে অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো সবাই। অদ্রি কোনোমতে প্রিয়তাকে চেপে নিজের হাসি আটকাচ্ছে। আর বাকি বন্ধুবান্ধবদের তো নাজেহাল অবস্থা। রুদ্র এতক্ষণ ভবনের ঘাসে বিস্তৃত বিশাল লনে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিবের ভাসনের মতো হাত উচিয়ে কথা বলছিলো। তবে ওদের এভাবে হাসাতে অপমানে কালো হয়ে গেলো ওর মুখ। চুপসানো গলায় বললো,

‘ এমন পাতি হাঁসের হাসি দিচ্ছিস ক্যান তোরা? আমি কি এমন কিছু বললাম?’

‘ তুই দশটা নাতি নাতনি থাকা নানীরে বিয়ে করলেও প্রেম প্রেম টাইপ বউ পাবি না বুঝছিস? আমার জমজ ভাই তো! তোর আমার ভাগ্যের লিখন একই শালা! হুদাই সবার কাছে হাসির পাত্র হইস না।’

হাহাকার হলো রুদ্রের মনে। মাঝে মাঝে মনে হয় অদ্রিকে ভুলে তার জমজ বোন বানানো হয়েছে। এই অসভ্য ইতর বদমাশ মেয়েটার উৎপত্তিই ওর জীবনকে নরক বানানোর জন্য। তবে এসবের কোনোকিছুর মধ্যেই প্রিয়তার ধ্যান নেই। সে চুপচাপ এককোণে বসে ক্লাসের নোটগুলো গুছিয়ে নিলো। কিছুদিন ধরেই বিষন্ন প্রিয়তার মন। ভয়াবহ ধরনের বিষন্ন। এর উৎপত্তি যে অভীর সেদিনকার সেই ব্যাবহার সেটা ভালোমতই জানে৷ তবে সেটা মনে আনতে চাইলো না। অদ্রি দেখলো প্রিয়তাকে। বললো,

‘ আর কতদিন এভাবে চুপসে থাকবি প্রিয়ু? একটু তো নরমাল হ!’

‘ আমি নরমালই আছি রে!’

‘ তুই কি মনে করিস আমি কিছু বুঝিনা? আচ্ছা তুই না ওই খাটাস রে আই মিন অভী ভাইয়ারে পছন্দ করিস না? বিয়ে করবি না দেখে জ্ঞান ট্যান হারিয়ে একাকার করে ফেললি। তাইলে সমস্যা কি তোর? সেদিন তো বাসায় গিয়ে ঠিকই রাতে বালিশ ভিজিয়েছিলি!’

প্রিয়তার এ প্রসঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগলো না। অবশ্য সেদিন সে বাসায় গিয়ে কেঁদেছিলো এটা সত্য। কান্নাটা আপাত দৃষ্টিতে নিছক মনে হলেও ওর অভিমানি মন যেন কোনোভাবেই নিজেকে সামলাতে পারেনি। হাতঘড়ির দিকে তাকালো সে। ব্যস্ত হয়ে বললো,

‘ জলদি ক্লাসে চল! টাইম হয়ে যাচ্ছে। ‘

ক্লাস টাইমে প্রিয়তা অদ্রিরা কখনোই একসাথে বসে না। এটা অবশ্য ওদের তিনজনেরই পরিকল্পনা। একসাথে বসলে ক্লাস ভালোমতো করতে পারে না দেখেই এই চিন্তাভাবনা৷ রুদ্র জানালার পাশে, অদ্রি ফার্স্ট বেঞ্চে আর প্রিয়তা সিট খুঁজতে থাকলো। ক্লাসে আসতে দেরি হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই এসে পড়ছে৷ এর মধ্যে থার্ড বেঞ্চে একটা সিট পেলো প্রিয়তা। সেখানে বসে আছে সুপ্তি। সুপ্তিকে ক্যাম্পাসের আগুন সুন্দরী বলা চলে। সাদা পোশাকে তার রূপ যেন নায়াগ্রা জলপ্রপাতের মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে চারিদিকে। সবাই জানে এই মেয়ে অন্তুর জন্য পাগল যেদিকে অন্তুর কোনো এটেনশন নেই তার প্রতি। প্রিয়তা কিছু না ভেবে সেখানে বসার জন্য তৎপর হলো। নিজের পাশে প্রিয়তাকে দেখে সুপ্তি কপট রাগ দেখিয়ে বললো,

‘ এখানে কি তোমার প্রিয়তা?’

‘ সিট খালি আছে এখানে। তাই বসবো।’

প্রিয়তা প্রতিউত্তর দিলেই বাধা দিলো সুপ্তির বান্ধবী। বললো,

‘ এখানে বসা চলবে না প্রিয়তা৷ সুপ্তি যার তার সাথে বসে না।’

প্রিয়তা অপ্রতিভ হলো। সে জানে কোনো না কোনো কারনে সুপ্তি প্রিয়তাকে পছন্দ করে না। এর এক কারন হলো প্রিয়তার মেধা আর দ্বিতীয় কারন হতে পারে অন্তু। শুরু থেকেই অন্তু প্রিয়তাকে ‘পটেটো’ বলে ডাকে আর অনেকটা ঈর্ষার কারণেই বলা যেতে পারে প্রিয়তাকে সুপ্তির পছন্দ না।

ব্যাপারটা ভালোলাগলো না প্রিয়তার। সে শান্ত বলে এই না যে চুপচাপ সবকিছু মাথা পেতে নিবে। প্রতিবাদী স্বরে বললো,

‘ আমি সুপ্তির সাথে কথা বলছি শামী। তোমার কথা না বললেও চলবে।’

চোখ কড়া হয়ে গেলো শামীর। তিরিক্ষি মেজাজে বললো,

‘ এই ললনারে কিছু বল!’

সুপ্তি প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ সিট আরও আছে প্রিয়তা। অন্যজায়গায় গিয়ে বসো। আমার একজন আসবে।’

প্রিয়তার দৃষ্টি ছোট হলো। মনে পুষলো রাগ। কপট দ্বিরুক্তি নিয়ে বেঞ্চে শব্দ করে বললো,

‘ তোমার একজনের সাথে তুমি অন্যজায়গায় বসো সুপ্তি। টিনেজারদের মতো আচরণ করবে না। এটা ক্লাস আর তুমি কেউ না এটা বলার আমি এখানে বসবো কি না!’

ক্ষেপে গেলো সুপ্তি। বললো,

‘ নিজেকে কি মনে করো তুমি? আগে তো এত পাওয়ার নিয়ে কথা বলতে না? এখন এত পাওয়ার বাড়লো কিভাবে? অভী ভাইয়ার ফিওন্সে হয়েই এই অবস্থা? অবশ্য আমি যতটুকু শুনলাম তুমি নাকি তার সাথে বিয়ে ভাঙার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছো?’

প্রিয়তা হতভম্ব হয়ে গেলো। কোন কথার মানে কোন কথা নিয়ে আসছে? নিঃশ্বাস ফেললো সে। ছোট্ট করে বললো,

‘ এটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?’

প্রিয়তার কন্ঠস্বর শীতল। স্পষ্ট ইঙ্গিত সে ঝগড়া করতে ইচ্ছুক না। তবে সুপ্তি এমন কিছু করলে সে ছাঁড়ও দিবে না এটাও সত্যি। সুপ্তি হাসলো। এগিয়ে এসে বললো,

‘ বাড়াবাড়ি আরও করবো যদি এখান থেকে সরে না পড়ো৷ তুমি চালাক মেয়ে। তাই আশা করছি ঝামেলা করবে না। লাস্টের দিকে তিন চারটা সিট আছে। বসে পড়ো ওখানে। যাও যাও!!’

প্রিয়তা দম নিলো। আশপাশে তাকিয়ে দেখলো সবার দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু তারা। সবাই স্পষ্ট দেখেছে সুপ্তির একরোখা কার্যকলাপ। তবে কেউ কথা বাড়ালো না। এটাই স্বাভাবিক। তারা টিনেজার না যে সিট নিয়ে কাড়াকাড়ি করবে। প্রিয়তা ঝামেলা চাইলো না, চুপচাপ ব্যাগ নিয়ে চলে গেলো পেছনে। অদ্রি রুদ্রিকের দিকে তাকিয়ে নিলো একবার। দুজনের চোখে মুখেই সীমাহীন রাগ৷ পারছেনা শুধু সুপ্তিকে ছ্যাঁচা বানিয়ে ফেলতে।

ক্লাসে স্যার এলো। শুরু করলো ক্লাস। শিক্ষক মহাশয় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ থিওরি সম্পর্কে আলোচনা করে যাচ্ছে আর প্রিয়তা বসে আছে চুপচাপ করে। কিছুই ভালোলাগছে না মেয়েটার৷ অভী নামটা ঘুরপাক খাচ্ছে চক্রের মতো করে। তবে মন তার বদ্ধ পুকুরের মতোই অনড়। কথা বলবে না। অভীকে একদন্ড পাত্তা দিবে না আর। মনে যত দুর্বলতা জেগে উঠেছিলো সবই কোণঠাসা করে রাখবে হৃদয়ের অগোচরে।

আচমকা একটা ভরাট পুরুষালি কন্ঠ কর্নকুহরে হানা দিতেই প্রিয়তার ধ্যান ভাঙলো। স্বরটা পরিচিত। কলম রেখে মাথা উচিয়ে তাকালো সে দরজার দিকে। একপলক হা হয়ে রইলো। সে বিনয়ী স্বরে বললো,

‘ স্যার কাইন্ডলি আপনি মিটিং রুমে গিয়ে বসুন। ইমার্জেন্সি মিটিংয়ের ডাক পড়েছে আপনাদের। ভিসি থেকে পার্মিশন পাওয়া গিয়েছে এই ব্যাচটা আমাদের কন্ট্রোল করার।’

কন্ঠস্বর অভীর। পরেছে ওশেন ব্লু শার্ট, কালো প্যান্ট। গরমে পুড়ে গিয়েছে শরীর। তবুও তামাটে রঙের টোন একবিন্দুও হেলফেল করেনি। বিষয়টা একই সাথে চিন্তার বিস্ময়ের। স্যার চলে গেলো। এসে পড়লো অভী আর অন্তু। সুপ্তি নড়েচড়ে উঠছে। উড়ো উড়ো মনটা টিউলিপের মতো দেখাচ্ছে অন্তুকে দেখে। ফিসফিসিয়ে আলাপন জমিয়ে ক্ষীর। অভী এসে প্রথমে অনর্গল বলে গেলো ক্লাসে আসার কারন। তারপর বাকি কাজগুলো শেষ করলো। এর মধ্যে অভী একবিন্দুও তাকায়নি প্রিয়তার দিকে। প্রিয়তার একই সাথে মন খারাপ হলেও তা অগোচরে রাখলো। নিজেকে গল্পের কোনো অবহেলিত চরিত্র মনে হচ্ছিলো তখন। কথা শেষ হওয়ার পর অভী সবার উদ্দেশ্যে হেসে বললো,

‘ সো আজকের মূল বিষয় এতটুকুই ছিলো গাইস। হ্যাভ অ্যা নাইস ডে।’

বস্তুত এতটুকুর পর অভীর চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু সে গেলো না। বড়ো বড়ো পা ফেলে দাঁড়ালো সুপ্তির সামনে। সুপ্তি হতভম্ব হলো। চট করে ধাতস্থ করতে পারলো না অভীর সরাসরি এখানে আসার কারন। যতটুকু পারা যায় ততটুকু উত্তেজনা চাপা রেখে জিজ্ঞেস করলো,

‘ কিছু বলবেন ভাইয়া?’

‘ কে বসেছে এখনে?’

‘ কেউ না।’

‘ তাহলে এখানে অন্য কাউকে বসতে না দেওয়ার কারন কি জানতে পারি?’

একদফা অবাক হলো ক্লাসের সবাই। প্রিয়তাও। কেননা ঘটনা ঘটেছে বেশ কিছু সময় আগে যখন অভী কি – স্যারও ক্লাসে আসেনি। তাহলে অভী জানলো কিভাবে? আমতা আমতা করলো সুপ্তি। বলার প্রয়াস করলো,

‘ আসলে……..’

‘ আপনি বিল গেটসের মেয়ে নন সুপ্তি। রিমেম্বার ইট। এই স্পেস আপনার প্রাইভেট প্রোপার্টি না যে যার তার ওপর হুকুম চালাতে পারবেন, কেউ রাজি না হলে তার পার্সোনাল ইস্যু নিয়ে তাকে আঘাত করতে পারবেন।’

তখনই সবার দৃষ্টি এড়িয়ে অভী প্রিয়তার উদ্দেশ্যে ছুড়লো,

‘ এখানে এসে বসুন প্রিয়তা কবির।’

কন্ঠটা একই সাথে দৃঢ় এবং জোড়ালো। স্পষ্ট ফর্মালিটির আভাস। ‘আপনি’ করে সম্বোধন করাতে প্রিয়তা নড়বড়ে হলো। সবার কৌতুহলী চোখ তার অবয়বে হাতছানি দেওয়াতে অবচেতন হয়ে উঠলো। ব্যাগ নিয়ে নিষপিষে বসলো সুপ্তির পাশে। অভী তা দেখে সুপ্তির উদ্দেশ্যে বললো,

‘ ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন।’

চলে গেলো অভী। ক্লাস নিঃশব্দ হয়ে গেলো। ব্যাপারটা পজিটিভলিই নিয়েছে সবাই। ধারনা হয়তো বাইরে জানালা নতুবা অন্য কোনো সূত্রের মাধ্যমে সে জেনেছে। প্রিয়তাও ব্যাপারটা নরমালি নিলো। নতুবা সে সবার সামনে তাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতো না যেমনটা সব জুনিয়রদের সাথে করে। অদ্রি এসে বললো,

‘ ব্যাটায় তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে বস।’

মানলো না প্রিয়তা। অভিমানি মন ধাতস্থ রেখেই বললো,

‘ এমন কিছুই না। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে সে এটাই করতো। উই আর নট মেড ফর ইচ আদার।’

.

.

#চলবে

প্রিয়কাহন পর্ব ১৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top